ছোটবেলায় ক্লাসে শিক্ষকরা যখন জিজ্ঞেস করতেন, বড় হয়ে কী হতে চাও? অন্যপাঁচজনের মতো তিনিও বলেছেন, ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই। ছেলেবেলার স্বপ্নপূরণের জন্য পদে পদে নানা প্রতিকূল পরিবেশের মুখোমুখি হতে হয়েছে তাকে। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হওয়ায় কঠিন সংগ্রামের মধ্যদিয়ে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন পার করতে হয়েছে। আজ তিনি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। দেশসেরা ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে একজন। অসংখ্য তরুণ ফ্রিল্যান্সারের অনুপ্রেরণা তিনি।
এতক্ষণ যার কথা বলছিলাম তিনি জনপ্রিয় অনলাইন মার্কেটপ্লেস আপওয়ার্কের টপ রেটেড প্লাস ও দেশসেরা সফল ফ্রিল্যান্সার সুমন সাহা। ছোটবেলা থেকেই অর্থনৈতিক টানাপড়েনের মধ্য দিয়ে পড়াশোনা শেষ করেছেন। পরে নিজের অদম্য চেষ্টা, অধ্যবসায় এবং কঠোর পরিশ্রমে হয়েছেন দেশসেরা ফ্রিল্যান্সার।
সুমন সাহার জন্ম নরসিংদী জেলার শিবপুর থানার আলীনগর গ্রামে। বাবা হরিপদ চন্দ্র সাহা ব্যবসায়ী। মা পুষ্প রানী সাহা গৃহিণী। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট সুমন। স্ত্রী সন্ধ্যা রায় বাংলাদেশ ব্যাংকে আইটি অফিসার। দুই ছেলেকে নিয়ে তাদের ছোট্ট সংসার।
চরসিন্দুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি, তারপর নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজ হতে বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি পাস করেন। ভর্তি হন টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষার পর চিন্তা নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। নিজের কিছু একটা করতে হবে। সে ভাবনা থেকে শিক্ষাজীবনের শেষের দিকে কিছু করার চেষ্টা করছিলেন কম্পিউটার প্রকৌশলী সুমন। বিভিন্ন আইটি ও সফটওয়্যার কোম্পানিতে চাকরির জন্য সিভি জমা দিতে থাকেন।
সুমন বলেন, সময়টা ২০১০ সালের অক্টোবর মাস। তখন বিশ্ববিদ্যালয় জীবন প্রায় শেষ। একদিন একটি জাতীয় দৈনিকে দেখি বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলে সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানগুলোর চাকরির মেলা হবে। মেলায় একটা সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানে শিক্ষানবিশ হিসাবে কাজ করার সুযোগ পাই। ওই মেলাতেই আউটসোর্সিং সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা লাভ করি।
আউটসোর্সিং বিষয়ে কৌতূহল বেড়ে যায়। ধীরে ধীরে জানার ও শেখার নেশা বাড়তে থাকে। ইন্টারনেটে প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জন করে নিজে নিজেই ওডেস্কে (বর্তমানে আপওয়ার্ক) একটা অ্যাকাউন্ট খুলি। শুরুতে অনেক কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। কাজ করতে গিয়ে কিছুই বুঝি না। আবারও ইন্টারনেট ঘেঁটে ঘেঁটে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করি। পরে বিড করা শুরু করি। কিন্তু দুঃখের বিষয় কোনো কাজ পাইনি।
আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে গিয়ে শুরুতেই হতাশ হন তরুণ এই ফ্রিল্যান্সার। ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সারদের কাছ থেকে পরামর্শ নেন। তারাপর স্থানীয় বাজারে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন। অভিজ্ঞ হলে পরে আন্তর্জাতিক মার্কেটে কাজ করা যাবে। তার এই হতাশার মাঝেই ভাগ্যদেবি প্রসন্ন হয়। তিনি যে সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানে শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করেছিলেন, সেখানে চাকরি হয়ে যায়। তারপর মনোযোগ দিয়ে কাজ করে টেকনিক্যাল বিষয়গুলো আয়ত্ত করতে থাকেন। এভাবে নিজে নিজে ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য প্রস্তুত হতে থাকেন।
দেশীয় সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানের চাকরিতে জীবন বেশ ভালই চলে যাচ্ছিল। তখন জীবনকে পূর্ণতা দিতে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। জীবনসঙ্গিনীও ফ্রিল্যান্সার। সুমনের ফ্রিল্যান্সার হওয়ার স্বপ্নে যোগ হলো নতুন পালক। স্ত্রী বললেন, তুমি যে সেক্টরে কাজ করছ সেটা অনেক ভাল এবং সম্ভাবনাময়। তুমি চাইলে কাজটা ফ্রিল্যান্সার হিসেবেও করার চেষ্টা করে দেখতে পারো। স্ত্রীর কথায় নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। তাছাড়া স্ত্রীও যখন ফ্রিল্যান্সার তখন এ দুজনে মিলে ভাল কিছু করা সম্ভব।
২০১২ সালে নতুন করে মার্কেটপ্লেসে কাজ শুরু করেন অদম্য অধ্যবসায়ী সুমন। শুরুর কিছুদিনের মধ্যেই সফটওয়্যার টেস্টিংয়ের একটা কাজ পান। এটা ছিল আইফোন মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন। এই পণ্যে টেকনিক্যাল ক্রটি আছে কিনা, আইফোনের বিভিন্ন ভার্সন, আইপ্যাডের সফটওয়্যারগুলো ঠিকঠাক মতো কাজ করছে কিনা সেটা পরীক্ষা করে দেখা। এই কাজটা তিনি খুব ভালো ভাবে শেষ করেন। পারিশ্রমিক হিসেবে পান মাত্র ৫ ডলার। কাজে ভীষণ সন্তুষ্ট হন ক্লায়েন্ট। আরও কয়েকটি কাজ দেন তাকে। তবে এবারের কাজগুলো একটু বেশি মূল্যের। এভাবেই কাজ নিয়ে ব্যস্ততার মধ্যদিয়ে কেটে যায় বছর।
২০১৩ সাল ছিল সুমনের জীবনের জন্য টার্নিং পয়েন্ট। বছরের শুরুতেই একটা ভাল ক্লায়েন্ট পান। দীর্ঘ ৯ বছর যাবৎ ওই ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করছেন তিনি।সুমন মূলত কাজ করেন মোবাইল অ্যাপস, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এবং সফটওয়্যারের মান নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। এর পাশাপাশি কাস্টমার সাপোর্ট, লেভেল টু, মানে সফটওয়্যারের কারিগরি সেবার বিভিন্ন দিক নিয়ে কাজ করেন।
একদিকে জব, অন্যদিকে ফ্রিল্যান্সিং। চাকরি, সংসার ও ফ্রিল্যান্সিং- সব তার পক্ষে একসাথে চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। খাওয়া-দাওয়া, কাজ, পরিবারে সময় দেয়া কোনকিছুই ঠিক মতো হচ্ছিল না। তখন কাউকে কিছু না জানিয়েই জবটা ছেড়ে দেন। সময়টা ছিল ২০১৬ সাল। তারপর ফ্রিল্যান্সিংকেই ফুলটাইম ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নেন।
সুমন বর্তমানে একটি বহুজাতিক সফটওয়্যার কোম্পানির রিলিজ ম্যানেজার হিসাবে কর্মরত আছেন। অ্যান্ড্রয়েড ও আইফোনের যেসব অ্যাপ্লিকেশন আছে, সেগুলোর প্রতিটি ভার্সনের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে ক্লায়েন্টের কাছে পাঠাতে হয়। তাছাড়াও তার আরও কয়েকটি খণ্ডকালীন ক্লায়েন্ট আছে এবং ন্যানোসফটবিডি নামে স্টার্ট আপ রয়েছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করেছেন টপ রেটেড প্লাস এই ফ্রিল্যান্সার। সেইসাথে আপওয়ার্কে ২০ হাজার ঘণ্টার বেশি সময়ের ৭৫টির বেশি প্রজেক্ট সম্পন্ন করেছেন। আপাত দৃষ্টিতে প্রজেক্টের সংখ্যা কম। তবে যেসব ক্লয়েন্টের সাথে কাজ করেছেন তাদের ৮০% সাথে লংটাইম কাজ করেছেন এবং এখনো করছেন।
সুমনের ভাষ্য, আমার আজকের এই অবস্থানে আসার পেছনে রয়েছে অনেক কাঠখড় পোড়ানো গল্প। এসএসসি পাস করার পর আমার তিন বোনের বিয়ে হয়ে যায়। তখন আর্থিক টানাপোড়েন ছিল সংসার। কলেজ জীবনের শুরু থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময়টা ছিল আমার জন্য অনেক কষ্টের, একইসাথে সংগ্রামের। এখনো ওইদিনগুলোর কথা মনে পড়লে আবেগ তাড়িত হয়ে পড়ি। ২০০৮ সালে আমি কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগে তৃতীয় বর্ষের প্রথম সেমিস্টারে পড়ি। তখন একটি কম্পিউটার কেনার মতো সামর্থ্য আমার ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাব ও বন্ধুদের ল্যাপটপই ছিল ভরসা।মেজো বোনজামাই আর বাবা মিলে আমাকে একটা কম্পিউটার কিনে দেয়। এমনও সময় গেছে সেমিস্টার শুরু হয়ে গেছে, বই কিনতে পারিনি। স্যারদের দেওয়া নোট ও বন্ধুদের বই থেকে খাতায় নোট করে নিয়ে পড়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় পরিবারের সবার কথা চিন্তা করতেন সুমন। ভাবতেন যদি পড়াশোনার পাশাপাশি বাবাকে একটু সাহায্য করতে পারতাম। বাবার মিষ্টির দোকানের আয়েই চলত সংসার। যদিও বাবা-মা মুখফুঁটে কখনো কিছু বলেননি। কিন্তু সুমন সবই বুঝতেন, তখন নিজের উপর ভীষণ রাগ হতো। ভবতাম বাবা-মার জন্য কী কিছুই করতে পারবো না? পরে তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি নিয়মিত দোকানে গিয়ে বাবাকে কাজে সাহায্য করতেন।
একজন টপরেটেড ফ্রিল্যান্সার মাসে কত টাকা আয় করে? জবাবে সুমন বলেন, ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে যাদের ধারণা আছে তারা জানেন, এটা একটা মাল্টি বিলিয়ন ডলারের মার্কেট। এখানে কারো যদি স্কিল থাকে এবং কেউ যদি সঠিক পথ ধরে আগাতে পারেন, তাহলে আর্নিংয়ের কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই। দেশে যারা টপ রেটেড ফ্রিল্যান্সার, যারা এক্সপার্ট লেভেলে কাজ করেন তাদের ইনকাম দেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। বরং কখনো তার চেয়েও বেশি।
সুমন বলেন, এখন ২০২২ সাল। আমি ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেছিলাম ২০১০ সালে। তখন ফ্রিল্যান্সারদের কাজে অনেক সীমাবদ্ধতা ছিল। এখন থেকে যদি ১০ বছর পেছনে ফিরে যাই, তাহলে দেখা যাবে রাত-দিনের তফাত। একজন ফ্রিল্যান্সারের কাজের জন্য যে জিনিসটি বিশেষ প্রয়োজন সেটি হলো, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট। আমি যখন ফ্রিল্যান্সিং শুরু করি, তখন বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সেবা এত ভাল ছিল না। তাই অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে। তখন ইন্টারনেটের দামটাও বেশি ছিল। এখন এ দুটিই সহজলভ্য হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মে কাজ করা ফ্রিল্যান্সারদের পারিশ্রমিক পাওয়ার আর্থিক মাধ্যম পেপ্যাল। বেশির ভাগ ক্লায়েন্টরা তাদের কাজের পারিশ্রক দিতে চান পেপ্যালে। কিন্তু আমাদের দেশে তো এখনো আন্তর্জাতিক লেনদেনের এই সেবা চালু হয়নি। এর জন্য ফ্রিল্যান্সারদের অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। শুধু এ সেবা না থাকার কারণে অনেকে কাজ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। যদি এই সেবাটা নিশ্চিত করা যায়, তাহলে ফ্রিল্যান্সারদের আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মের পারিশ্রমিক প্রাপ্তি সহজ হবে। সেই সাথে দেশে রেমিটেন্সের পরিমাণও বাড়বে।
সুমনের মতে, একজন ফ্রিল্যান্সারের সাফল্যের মূলমন্ত্র হলো ধৈর্য ও ধৈর্য। তিনি বলেন, ফ্রিল্যান্সিং এমন একটা ক্ষেত্র, যেখানে আপনাকে ধৈর্য নিয়ে বিরামহীনভাবে লেগে থাকতে হবে। সেইসাথে থাকতে হবে দক্ষতা, কাজে প্রতি ভালোবাসা, শেখার আগ্রহ এবং অদম্য ইচ্ছা শক্তি। যেটাই করেন না কেনো মন থেকে ভালোবেসে আন্তরিকতার সাথে করতে হবে। আমাদের নতুন ফ্রিল্যান্সারদের ধৈর্য্য অনেক কম। তাই বেশির ভাগই ফেল করে। আর আউটসোর্সিংয়ের ক্ষেত্রে কাজ যথাসময়ে শেষ করতে হয়। তবেই আস্তে আস্তে সাফল্য এসে ধরা দেবে।
দীর্ঘদিন ধরে ফ্রিল্যান্সিংয়ে কাজ করা সুমনের সবচেয়ে বড় অর্জন- তার ফ্রিল্যান্সিং জীবন সংগ্রাম নিয়ে বই। ‘ফ্রিল্যান্সার সুমনের দিনরাত’ শিরোনামে বইটি লিখেছেন তথ্যপ্রযুক্তি সাংবাদিক রাহিতুল ইসলাম। তিনি বলেন, সত্যিই এটি আমার ফ্রিল্যান্সিং জীবনের এক বিশেষ উপহার ও স্বীকৃতি। এছাড়াও এ কাজ করতে গিয়ে অসংখ্য গুণী মানুষের স্নেহ, সম্মান ও ভালোবাসা পেয়েছি। যানজটের শহরে দেশি প্রতিষ্ঠানের চাকরি ছেড়ে ঘরে বসে বিদেশি প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুবাদে বাবা-মা, স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে খুব ভালভাবে জীবন যাপন করতে পারছি, এটাও আমার জীবনের অনেক বড় প্রাপ্তি।
সুমনের এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে বেশকিছু মানুষের অবদান। তিনি বলেন, জীবনে যতটুকু অর্জন করেছি তার সবকিছুর জন্য মহান ঈশ্বরকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই। তার কৃপায় সব সম্ভব হয়েছে। আর তার কৃপা এই পৃথিবীতে যাদের মধ্যদিয়ে আমি লাভ করেছি তারা হলেন, বাবা-মা, শিক্ষক, বন্ধু-বান্ধব, দাদা অনন্ত কুমার সাহা আর প্রিয়তম স্ত্রী সন্ধ্যা রায়। সবাই আন্তরিক ভালোবাসা, উৎসাহ, অনুপ্রেরণা, সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে পাশে ছিল। এখনও আছে। সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আমি আরও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আপওয়ার্কের প্রতি। এক আপওয়ার্ক আমাকে যা দিয়েছে বা যা যা অর্জন করেছি তা আমার জীবনের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সারদের সবচেয়ে বড় কমিউনিটি বাংলাদেশ আপওয়ার্কস গ্রুপের অ্যাডমিন হিসেবেও আছেন সুমন। নতুনদের উদ্দেশে সুমন বললেন, আইওএস অ্যান্ড্রয়েড ডেভেলপমেন্টে এসব ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা কিছুটা কম। এসবে চেষ্টা করা ভালো। আর নতুনদের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে সব সময়। লেগে থাকুন, সাফল্য আসবেই।
সুমন শুধু ফ্রিল্যান্সিং কাজ নিয়েই থাকেন না। সময় পেলে লেখালেখিও করেন। নিজের ক্যারিয়ারের অভিজ্ঞতাগুলো আগামী দিনের তরুণ ফ্রিল্যান্সারদের জানাতে নিয়মিত লেখালেখি করেন। আর এসব লেখা প্রকাশের জন্য একটা ব্লগ তৈরি করেছেন। ওই ব্লগে তরুণ ফ্রিল্যান্সারদের বিভিন্ন দিক-নির্দেশনামূলক লেখা নিয়মিত প্রকাশ করেন।
ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানালেন সফল এই ফ্রিল্যান্সার। তিনি বলেন, আমাদের দেশে অনেক মেধাবি তরুণ রয়েছেন, যারা আইটি সেক্টরে কাজ করছেন। অসংখ্য তরুণ রয়েছে যারা ফ্রিল্যান্সিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে নেয়ার স্বপ্ন দেখছেন। ভবিষ্যতে পরিকল্পনা রয়েছে এসব স্বপ্নবাজ তরুণদের জন্য একট তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করার। যেখান থেকে তৈরি হবে মানসম্পন্ন প্রযুক্তিবিশ্লেষক, ভালো ফ্রিল্যান্সার। এই মানুষগুলো যাতে দেশকে প্রযুক্তিখাতে উন্নতির শিখরে তুলে ধরতে পারে। আশার কথা হলো, আমাদের সরকার প্রযুক্তিবান্ধব। সারাদেশের মেধাবি তরুণ-তরুণীদের আইটিতে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করছে। তাদেরকে ফ্রিল্যান্সিংয়ে উৎসাহিত করতে নানাভাবে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। তরুণদের ফ্রিল্যান্সিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে নেয়ার জন্য প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আমরা যারা ফ্রিল্যান্সিংয়ে আগ্রহী, আমাদের এসব সুযোগগুলো যথাযথভাবে সদ্ব্যবহার করা উচিত।
সূত্র: bbarta24.com