বাংলাদেশে আইটি ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে পেওনিয়ার অনেক জনপ্রিয়। পেওনিয়ার প্রিপেইড কার্ডের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার ফ্রিল্যান্সার ও অনলাইন সেলার। বিশেষ করে দেশে যারা ফাইবার ব্যবহার করেন তাদের সবাই বিপাকে পড়েছেন অনলাইনে কাজ করে পারিশ্রমিকের টাকা হাতে পেতে। একই বিড়ম্বনায় আছেন আপওয়ার্কে কাজ করে যারা পেওনিয়ার কার্ডে ইতিমধ্যে আয়কৃত ডলার জমা করেছেন তারাও।
আপাতদৃষ্টিতে পেওনিয়ারের সমস্যাটা মনে হচ্ছে একটু জটিল, কবে নাগাদ সমাধান হবে তা বলা মুশকিল। ২. ১ বিলিয়ন ডলার হেরফের করার অভিযোগে ওয়্যারকার্ড এর সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জার্মানিতে গ্রেফতার হন। সেই ইস্যুতে পেওনিয়ার এর সকল কার্ড এবং কার্ড একাউন্ট বর্তমানে ফ্রিজ করে দেয়া হয়েছে, সবধরনের লেনদেন এই মুহুর্তে বন্ধ।
যুক্তরাজ্যের ফিন্যান্সিয়াল কনডাক্ট অথোরিটি (এফসিএ), ওয়্যারকার্ড সলিউশন লিমিটেডকে সব ধরনের আর্থিক কর্মকাণ্ড বন্ধসহ অন্যান্য বিধিনিষেধ দিয়েছে। সবধরনের আর্থিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ায় ২৬ শে জুন ২০২০ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই সমস্যা শুরু হয়েছে। এতে সব পেওনিয়ার প্রিপেইড মাস্টারকার্ড ব্যবহারকারী সমস্যায় পড়েছেন। কারণ, পেওনিয়ার মাস্টারকার্ড বরাদ্দ করে ওয়্যারকার্ড ইউকে। এফসিএ জানিয়েছে যে তারা ওয়্যারকার্ড গ্রাহকদের অর্থ সুরক্ষার প্রাথমিক লক্ষ্য নিয়ে এই ব্যবস্থা নিয়েছে। এফসিএ থেকে পরবর্তী ক্রিয়াকলাপের জন্য, আপনি সাময়িকভাবে আপনার কার্ডের অর্থ উত্তোলন করতে পারবেন না, বা আপনার কার্ডে নতুন অর্থ প্রদান করতে পারবেন না।
গত সপ্তাহ থেকেই আমি নিজে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি কার্ডে অনলাইন পেমেন্টের ক্ষেত্রে। নিরাপত্তার কথা বলে এখনতো আনুষ্ঠানিক ভাবেই বিশ্বজুড়ে সেবাটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে সমস্যার তীব্রতায় বোঝা যাচ্ছে এই সমস্যা সহসাই সমাধান হবে না। কার্ড ইউজারদের সবকিছু ফ্রিজ করে দেওয়া হয়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে সাবসক্রিপশন সেবা নিতে। কার্ডের মাধ্যমে যাবতীয় কার্যক্রম অনলাইন সেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে বড় সমস্যা হচ্ছে। আবার অনেকের ডলার আটকে গেছে।
অবশ্য পেওনিয়ার জানিয়েছে, প্রিপেইড কার্ড ব্যবহারকারীরা সাময়িকভাবে অর্থ উত্তোলন করতে না পারলেও পেওনিয়ারের কাছে থাকা অধিকাংশ অর্থের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। পেওনিয়ার এর পক্ষ থেকে আরো জানানো হয় আপনার ভবিষ্যতের আগত অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব পড়বে না। কিন্তু তারপরও মনে সংশয় থেকে যায়, পেওনিয়ার এর পেমেন্ট প্রটেকশন ২২ নম্বর অধ্যাদেশ পড়ে দেখতে পারেন। ছবি নিন্মরূপঃ
তবে এটাও সত্য যে পেওনিয়ারের গুরুত্বের কথা বলে শেষ করা যাবেনা, পেওনিয়ারের গ্লোবাল পেমেন্ট সার্ভিসটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আইটি ফ্রিল্যান্সারদের জন্য। এর মাধ্যমে দেশের বাইরের ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে খুব সহজেই পেমেন্ট রিসিভ করা যায় বা পেমেন্ট আনা যায়। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত পেওনিয়ারের কোন বিকল্প নেই। অতএব পেওনিয়ারের কাছ থেকে পরবর্তী আপডেট না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের সকলেরই পেওনিয়ারের প্রতি আস্থা রাখা উচিত।
পরিশেষে, যদি লেখাটি আপনার কোনো প্রকার উপকারে আসে তাহলে দয়াকরে সকল আইটি ফ্রিল্যান্সার ভাইদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না। দেশের জন্য এবং দেশকে ভালোবেসে কাজ করুন। মার্কেটপ্লেসে আমাদের কাজের গুণমান ঠিক রাখতে সহযোগিতা করুন। কোনো প্রকার প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করুন, আমি যথাসাথ্য চেষ্টা করবো আপনার প্রশ্নের উত্তর বা আপনাকে সহযোগিতা করার জন্য।