করোনায় (COVID-19) স্তম্ভিত পুরো বিশ্ববাসী!

আইটি ফ্রিল্যান্সিং করার সুবিধার্থে বিশ্বের প্রায় বিশটি(২০) দেশেরও বেশি মানুষের সাথে প্রতিনিয়ত আমার কথা হয়। কাজের ফাঁকে ফাঁকে প্রায়ই তাদের সাথে করোনার ভয়াবহতা নিয়ে কথা বলি। সকলেই অনেক উদ্বিগ্ন এবং সকলেরই একই কথা একটু সচেতনতা এবং সতর্কতাই পারে আমাদের এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে।

করোনা ভাইরাস কি?
করোনাভাইরাস এমন একটি সংক্রামক ভাইরাস, যা এর আগে কখনো মানুষের মধ্যে ছড়ায় নি। ভাইরাসটির আরেক নাম ২০১৯এনসিওভি। এটি এক ধরণের করোনাভাইরাস। করোনাভাইরাসের অনেক রকম প্রজাতি আছে, কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ছয়টি মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে। করোনাভাইরাস এমন এক ভাইরাস, যা সাধারণ ঠাণ্ডা লাগার মতোই প্রথমে আক্রমণ করে ফুসফুসে। এই ভাইরাস থেকে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দেখা দেয়। ধীরে ধীরে তা মারাত্মক আকার ধারণ করে। যার থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ কী?
এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শুরুতে জ্বর ও শুষ্ক কাশি হতে পারে। এর সপ্তাহখানেক পর শ্বাসকষ্টও দেখা দেয়। অনেক সময় নিউমোনিয়াও হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা লাগে। তবে এসব লক্ষণ মূলত রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরই জানা গেছে। সেক্ষেত্রে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার একদম প্রাথমিক লক্ষণ কী বা আদৌ তা বোঝা যায় কিনা তা এখনো অজানা। তবে জ্বর, কাশি, শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যাই মূলত প্রধান লক্ষণ।

আক্রান্ত সব রোগীর একরকমের যা আভাসিত হয়েছে:
♦অসম্ভব জ্বর।
♦শ্বাস কষ্ট।
♦কাশি।
♦ডুবে যাবার মত দমবন্ধ অনুভূতি।

একজন ইতালিয়ান ডাক্তারের(Dr. Daniele Machini) চিঠি থেকে কিছু অংশ বিশেষ:
বিশ্বাস করতে পারছিনা, কি দ্রুত এসব ঘটে গেল! আমরা সবাই ক্লান্ত। কিন্তু কেউ থামতে চাইছিনা। এটা অত্যন্ত সংক্রামক, এই ভাইরাসটি একেবারেই অন্যরকম। সবাই মধ্যরাত পর্যন্ত কাজ করে চলছি। ডাক্তাররা নার্সদের মত অবিরাম কাজ করে চলছেন। দুই সপ্তাহ ধরে আমি বাসায় যাই না। আমার পরিবারের বয়স্ক সদস্যদের জন্য আমি শঙ্কিত।

সন্তানদের সঙ্গে ক্যামেরা ব্যবহার করে কথা বলছি। মাঝে মাঝে আমি স্ত্রীর ছবির দিকে তাকিয়ে কাঁদি। আমাদের কারো কোন দোষ নেই। যারা আমাদের বলেছিল এই রোগটি তেমন ভয়ংকর নয়, সমস্ত দোষ তাদের। তারা বলেছিল এটি সাধারণ এক ধরনের ফ্লু। কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। আর এখন অনেক বেশি দেরি হয়ে গিয়েছে। বৃদ্ধ রোগীরা এই রোগের সঙ্গে যুদ্ধে পেরে উঠছেন না। আমরা কাঁদছি, আমাদের নার্সরা কাঁদছে। সবাইকে বাঁচিয়ে তুলবার সামর্থ্য আমাদের নেই।

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করতে:
১। সাবান, গরম পানি বা স্যানিটাইজার দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে।
২। হাঁচি বা কাশির সময় টিস্যু ব্যবহার করতে হবে। টিস্যু না থাকলে কনুইয়ের মাঝে নাক-মুখ ঢাকতে হবে।
৩। হাত না ধুয়ে চোখ, মুখ বা নাকে হাত দেওয়া যাবে না।
৪। যেখানে সেখানে থু থু ফেলা যাবে না।
৫। সবসময় হাতের কাছে বিশুদ্ধ পানি রাখতে হবে।
৬। একবারে বেশি করে পানি পান করে লাভ নেই। বরং কিছুক্ষণ পরপর অল্প অল্প পান করে কণ্ঠনালীকে সবসময় আদ্র করে রাখুন।
৭। ট্রেন, বাস এবং যেকোনো পাবলিক ট্রান্সপোটেশনে মাস্ক পড়তে ভুলবেন না।
৮। অসুস্থ কারো খুব কাছে যাওয়া এবং একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ভীড় এড়িয়ে চলতে হবে।
৯। যে সব খাবারে ভিটামিন সি আছে সেই খাবার গুলো বেশী করে খেতে হবে।

সতর্কতাঃ
দয়া করে ঘরের বাইরে বের হবেননা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া নির্দেশনার কথা শুনুন এবং মেনে চলুন, শুধুমাত্র ইমার্জেন্সি কারন ছাড়া ঘর থেকে বের হবেননা। এই মুহূর্তে আমাদের সকলের সচেতনতাই এই রোগের একমাত্র প্রতিষেধক। যারা আসলেই করোনার ভয়াবহতা সম্পর্কে অবহিত তাহলে দয়া করে আপনার পাশের জনকে, পরিবার-পরিজনকে অবগত করুন। মনে রাখবেন ধনী-গরীব যেই হোক না কেন প্রকৃতির কাছে আমরা সবাই সমান।

সূত্র: ইন্টারনেট ও আমার সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণ।

করোনায় (COVID-19) স্তম্ভিত পুরো বিশ্ববাসী!

Write a comment....

Scroll to top
error: Content is protected !!