রাহিতুল ভাই প্রথম ইন্টারভিউয়ে আমাকে যখন বলল, আপনার উঠে আসার গল্পটি এবং হৃদয়ছোঁয়া কষ্টের ইতিহাস একটি বইয়ে বাঁধানো যায়। তখন আমি খুব অবাক হয়েছি, ভেবেছি আমাকে নিয়ে লিখতে লিখতেই হয়তো একটা মজা করেছে। সত্যিই এটি আমার জীবনের এক চমকপ্রদ এবং অনেক বড় পাওয়া। রাহিতুল ইসলাম ভাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন আমাকে নিয়ে একটি গ্রন্থ রচনা করেছেন যার নাম “ফ্রিল্যান্সার সুমনের দিনরাত “। আমি আরোও কৃতজ্ঞাতা প্রকাশ করছি Upwork এর প্রতি। এক আপওয়ার্ক আমাকে যা দিয়েছে বা আপওয়ার্ক থেকে যা যা অর্জন করেছি তা আমার জীবনের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
শেষমেশ, বইটির মোড়ক উন্মোচন হয় ২০২০ সালের বইমেলার তৃতীয় সপ্তাহে, একুশে ফেব্রুয়ারী। বইটি প্রকাশ করছে স্বপ্ন ৭১ প্রকাশন। হঠাৎ একদিন একাত্তর টিভি থেকে আমাকে ফোন করে জানানো হয় যে আপনাকে নিয়ে একটি বই বের হয়েছে এবং আমরা বইটি পড়ে দেখেছি। আপনার উঠে আসার গল্পটি সত্যিই অনেকের জন্য অনুপ্রেরণামূলক হবে। আপনার যদি আপত্তি না থাকে তাহলে আমরা আপনাকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করতে চাই।
প্রথমে কিছুটা দ্বিমত পোষণ করলেও অবশেষে অনেকের জন্য অনুপ্রেরণামূলক হবে এই ভেবে আমি রাজি হয়, ২৪শে ফেব্রুয়ারি ২০২০ খুব ভোরে আমাকে নিয়ে একাত্তর টিভি হয় রওনা আমার গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে। যেতে যেতে আমাকে বোঝাচ্ছিল কিভাবে দৃশ্যগুলো ক্যামেরাবন্দি করবে, এর আগে কখনো ক্যামেরার সামনে অভিনয় করা হয়নি তাই কিছুটা হলেও ইতস্ততঃ ছিলাম। গ্রামের বাড়ির শুটিং শেষে অবশেষে ফিরে আসি ঢাকায় আমার নিজ বাসভবনে, সেখানে আমার সাথে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে, আমি কিভাবে কাজ করি সেই দৃশ্যগুলো ক্যামেরাবন্দি করা হয়। তথ্যচিত্রটি একাত্তর টিভিতে সম্প্রচার করা হয় ২৮ ও ২৯শে ফেব্রুয়ারি ২০২০, তাদের প্রকাশিত ২৪ ঘন্টার বিশেষ বিশেষ খবরে।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী (জুনাইদ আহমেদ পলক) ভাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ তাঁর পাঠানো শুভেচ্ছার জন্য এবং একাত্তর টিভিতে প্রকাশিত তথ্যচিত্রটি অন্যদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার জন্য। আমি মনেকরি এটি আমার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারের অনেক বড় পাওয়া এবং একটি মাইলফলক অর্জন। আমি নতুনদের ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে যথাযথ দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য যথাসাধ্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। কারণ নতুনদের অনেকেই শুরুতে অনেক ভুল-ত্রুটি করে থাকে। ক্লায়েন্টের মনে বাংলাদেশ সম্পর্কে বাজে ধারণাও তৈরি হয় যা আমাদের ফ্রিল্যান্সিং জগতে কিছুটা হলেও এর প্রভাব পড়ে।
অবশেষে, সত্যিই অতীতের ফেলে আসা দিনগুলো কখনো ভুলার নয়। জীবনে যতটুকু অর্জন করেছি তার সব মহান ঈশ্বরের কৃপায়, মা-বাবার ও শিক্ষকদের ভালোবাসায়, বন্ধুদের সহযোগিতা, দাদা অনন্ত কুমার সাহার ছায়াতলে আর স্ত্রীর অনুপ্রেরণায়। আমি একজন অতি সাধারন মানুষ আর এভাবেই থাকতে ভালবাসি। কখনো ভাবি নাই আমার মত ক্ষুদ্র একজনকে নিয়ে বই লেখা এবং তথ্যচিত্র হতে পারে ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে।
2 thoughts on “একাত্তর টিভিতে আমার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার নিয়ে নির্মিত একটি তথ্যচিত্র!”